অন্তিম রোগশয্যায় আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ)— এর শিক্ষাপ্রদ কথোপকথনঃ ইবনে—কাসীর ইবনে আসাকীরের বরাত দিয়ে এই ঘটনা বর্ণনা করেন যে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) যখন অন্তিম রোগশয্যায় শায়িত ছিলেন, তখন আমীরুল মু’মিনীন হযরত ওসমান (রাঃ) তাঁকে দেখতে যান৷ তখন তাঁদের মধ্যে শিক্ষাপ্রদ যে কথোপকথন হয় তা নিম্নরুপঃ-
1. হযরত ওসমানঃ ﻣﺎ ﺗﺸﺘﻜﻲ আপনার অসুখটা কি?
→হযরত ইবনে মাসউদঃ ﺫﻧﻮﺑﻲ আমার পাপসমূহই আমার অসুখ ৷
2. ওসমান গণীঃ ﻣﺎ ﺗﺸﺘﻬﻲ আপনার বাসনা কি?
→ইবনে মাসউদঃ ﺭﺣﻤﺔ ﺭﺑﻲ আমার পালনকর্তার রহমত কামনা করি৷
3. ওসমান গণীঃ আমি আপনার জন্যে কোন চিকিৎসক ডাকব কি?
→ইবনে মাসউদঃ ﺍﻟﻄﺒﻴﺐ ﺍﻣﺮﺿﻨﻲ চিকিৎসকই আমাকে রোগাক্রান্ত করেছেন৷
4. ওসমান গনীঃ আমি আপনার জন্যে সরকারী বায়তুল মাল থেকে কোন উপটৌকন পাঠিয়ে দেব কি?
→ইবনে মাসউদঃ ﻻﺣﺎﺟﺔ ﻟﻲ ﻓﻴﻬﺎ এর কোন প্রয়োজন নেই৷
→ওসমান গণীঃ উপটৌকন গ্রহণ করুন৷ তা আপনার পর আপনার কন্যাদের উপকারে আসবে৷
→ইবনে মাসউদঃ আপনি চিন্তা করছেন যে, আমার কন্যারা দারিদ্র ও উপবাসে পতিত হবে৷ কিন্তু আমি এরুপ চিন্তা করি না৷ কারণ, আমি কন্যাদেরকে জোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছি যে, তারা যেন প্রতিরাত্রে সূরা ওয়াক্কিয়া পাঠ করে৷
আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)— কে বলতে শুনেছি,
ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺳﻮﺭﺓﺍﻟﻮﺍﻗﻌﺔ ﻛﻞ ﻟﻴﻠﺔ ﻟﻢ ﺗﺼﺒﻪ ﻓﺎﻗﺔ ﺍﺑﺪﺍ ”
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা ওয়াক্কিয়া পাঠ করবে, সে কখনও উপবাস করবে না ৷
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ [রা.] বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সুরা ওয়াক্বিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না। হজরত ইবনে মাসউদ [রা.] তাঁর মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন। [বাইহাকি:শুআবুল ঈমান-২৪৯৮]
সুরা আর রাহমান, সুরা হাদিদ ও সুরা ওয়াকিয়া’র তেলাওয়াতকারীকে কেয়ামতের দিন জান্নাতুল ফিরদাউসের অধিবাসী হিসেবে ডাকা হবে। অন্য এক হাদিসে আছে, সুরা ওয়াকিয়াহ হলো ধনাঢ্যতার সুরা, সুতরাং তোমরা নিজেরা তা পড় এবং তোমাদের সন্তানদেরকেও এ সুরার শিক্ষা দাও। অন্য এক বর্ণনায় আছে: তোমাদের নারীদেরকে এ সুরার শিক্ষা দাও। আম্মাজান হজরত আয়েশা [রা.] কে এ সুরা তেলাওয়াত করার জন্য আদেশ করা হয়েছিল।
তাছাড়া অভাবের সময় এ সুরার আমলের কথাটা তো হাদিস দ্বারাই প্রমানিত। এমনকি বর্ণিত আছে যে হজরত ইবনে মাসউদ [রা.] কে যখন তার সন্তানদের জন্য একটি দিনারও রেখে না যাওয়ার কারণে তিরস্কার করা হলো তখন তিনি উত্তরে বলেছিলেন, তাদের জন্য আমি সুরা ওয়াকিয়াহ রেখে গেলাম। [ফয়জুল কাদির-৪/৪১]
সুবহানাল্লাহ! মহান রাব্বুল ইজ্জতের পবিত্র কালামের বরকত কত পাওয়ারফুল আপনি-আমি তা অনুধাবন করতে পারি কি?
তাই আসুন সকলে সূরা ওয়াক্কিয়া পাঠের এই অতি মূল্যবান আমলটি প্রতিদিন আদায় করার চেষ্টা করি৷ আল্লাহ আমাদের প্রত্যেককে আমল করার তাওফিক দিন৷ আমীন

7 Comments
Good
ReplyDeleteThanks
DeleteHelpful
ReplyDeleteআলহামদুলিল্লাহ
ReplyDeleteThanks
Deleteআলহামদুলিল্লাহ
ReplyDeleteThanks
Delete